গোলাপগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্তানদের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এখনো গ্রেফতার হয়নি কেউ
- আপডেট সময় : ০৫:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩ ৫১ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দড়া পূর্বচক গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ আলীর স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ৪ সদস্যের উপরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি।
অভিযোগ পেলেও মামলা রেকর্ড না হওয়ায় আসামী গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানান গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ও তদন্ত কর্মকর্তা এখলাসুর রহমান।
এদিকে, ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে লিখিত অভিযোগ করলেও হাসপাতাল থেকে ফিরে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় আবারো মামলা দায়ের করতে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ আলীর ছেলে মইন উদ্দিন ও জয়নাল উদ্দিন। তবে রাত সাড়ে ৯টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত বসেও মামলা করতে পারেননি বলে জানান মইন উদ্দিন।
মইন উদ্দিন জানান, তদন্ত কর্মকর্তা এখলাসুর রহমান একবার এসে আগের অভিযোগ থেকে কিছু পরিবর্তন করে আরো একটি অভিযোগ লিখে আনতে বলেন। তারা আধা ঘন্টার মধ্যে অভিযোগ লিখে আনলেও তদন্ত কর্মকর্তাকে আর পাননি। রাত সোয়া ১২টরদিকে তদন্ত কর্মকর্তা এখলাস নতুন লেখা অভিযোগ গ্রহণ করে তাদের চলে যেতে বলেন। এব্যাপারে এখলাসুর রহমান বলেন, ওসির সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।
উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ আলীর পরিবারের সাথে পার্শ্ববর্তী ছালেক আহমদের পবিবারের ভূমি নিয়ে বিরোধ ছিল। গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৭টারদিকে ছালেক আহমদ দলবল নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ আলীর ঘরের দরজার সামনে বেড়া দিতে শুরু করে।
এসময় হারিছ আলীর ছেলে মইন উদ্দিন, জয়নাল উদ্দিন বাধা দিতে গেলে ছালেক আহমদ ও তার পরিবারের লোকজন দা, শাবলসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলায় চালায়। মইন উদ্দিন ও জয়নাল কে রক্ষা করতে এসে তাদের মা হাসানা বেগম ও মইন উদ্দিনের স্ত্রী রিনা বেগমও হামলার শিকার হোন। হামলায় মইন উদ্দিন, জয়নাল উদ্দিন, তাদের মা হাসানা বেগম ও মইন উদ্দিনের স্ত্রী রিনা বেগম গুরুতর আহত হোন।
গুরুতর আহত মইন উদ্দিনের স্ত্রী রিনা বেগমের মাথায় গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। তার মাথায় ২২টি সেলাই দেয়া হয়েছে। এছাড়া, শাবলের আঘাতে তার উরুতে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মইন উদ্দিন , জয়নাল উদ্দিন ও হাসানা বেগমের মাথায়ও গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তাদের প্রত্যেকের মাথায় ৮ থেকে ১০টি সেলাই দিয়েছেন চিকিৎসক। তাদের মা বৃদ্ধা হাসানা বেগম হাত দিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে গেলে দায়ের কোপে তার হাতে গভীর ক্ষত হয়ে হাতের হাড় ভেঙ্গে যায়। চিকিৎসক হাতের হাড়ে রড বসিয়েছে বলে জানিয়েছেন মইন উদ্দিন।
ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার রাতেই একই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আলেক আহমদ, ছালেক আহমদ, লায়েক আহমদ, ছালেক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ ও মাসুদ আহমদ, আলেক আহমদের স্ত্রী মুসলিমা, লায়েক আহমদের স্ত্রী রুলি বেগমকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় অভিযোগ করা হয়।
মইন উদ্দিন জানান, শুধু দা দিয়ে কোপায়নি, প্রত্যেকের পুরো শরীরে বেধড়ক আঘাত করা হয়েছে। গতকাল রাতে ধানায় অভিযোগ করতে গিয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত বসে মাথার যন্ত্রনায় সীমাহীন কষ্ট হয়েছে। রাত ১২টা পর্যন্ত বসেও মামলা করতে না পেরে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এখলাসুর রহমান বলেন, পূর্বে অভিযোগ দিয়েছেন, কিন্তু অভিযোগকারীদের এনআইডি কার্ডের নম্বর না থাকায় এনআইডি নম্বর সহ তাদেরকে আরো একটি অভিযোগ লিখে আনতে বলেছি।