ঢাকা ১২:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নওগাঁর মান্দায় মিষ্টি আলুর গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে কুপিয়ে জখম নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের দিয়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন নওগাঁয় পাগলা শিয়ালের আক্রমন ও কামড়ে ৩ নারীসহ ৫ জন আহত কাজ না করে সরকারি টাকা লোপাট” এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে পথ সভা মান্দায় মণ্ডপে মণ্ডপে নগদ অর্থ উপহার দিলেন বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডা, ইকরামুল বারী টিপু নওগাঁ মান্দা একরুখী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম দেখার মত মনে হয় কেহ নাই ভারতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে এনায়েতপুরে বিক্ষোভ মিছিল দি সিলেট ইসলামিক সোসাইটিরপঞ্চম শ্রেণি মেধাবৃত্তি প্রদান সম্পন্ন নর্থইস্ট নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদেরআন্দোলন, কলেজ বন্ধ ঘোষণা জগন্নাথপুরে আফজল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন

বন্ধ হচ্ছে গণহারে মাস্টার্স করার সুযোগ!

প্রতিনিধির নামঃ
  • আপডেট সময় : ০৮:১১:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২ ৬৩ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনার্সকে শেষ ডিগ্রি বাস্তবায়ন করে গণহারে মাস্টার্স করার সুযোগ বন্ধ করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন নীতি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। কাগজে-কলমে আগে থেকেই অনার্সই টার্মিনাল ডিগ্রি হলেও এখন থেকে সীমিত করার সুপারিশ তাদের। তবে বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মাস্টার্সে শর্ত জুড়ে দেওয়ার প্রথাও থামানোর দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, স্নাতকই হবে প্রান্তিক ডিগ্রি। এটাই হচ্ছে আমাদের মূল বার্তা। বাংলাদেশে এটা আছে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচার, এমবিবিএস, ভেটেরিনারি বিষয়গুলোতে পাঁচ বছরের স্নাতক ডিগ্রি। অনার্স পাস করে বিসিএসে অংশ নিয়ে মাস্টার্স ছাড়া সিনিয়র সচিবও হতে পারে। কোনো সমস্যা নেই। এরপর যারা উচ্চতর শিক্ষা যেমন এমফিল-পিএইচডি, শিক্ষকতা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যেতে চায় তাদের মাস্টার্সের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে সংখ্যাটা হবে সীমিত।

মাস্টার্স করতে পারা শিক্ষার্থীদের সংখ্যার বিষয়ে তিনি বলেন, একটা বিভাগ কতজন শিক্ষার্থীকে মাস্টার্স করাতে পারবে সেটা নির্ভর করবে সে বিভাগের কতজন অধ্যাপক আছেন, যারা ভালোভাবে গাইড করতে পারবেন তাদের। মাস্টার্সে এবং পিএইচডিতে থিসিস করতে হয়, গবেষণা করতে হয় এটার জন্য গাইড খুব গুরুত্বপূর্ণ।

বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে যারা মাস্টার্স করে তারা স্কলারশিপ বা ফেলোশিপ নিয়ে করে। তাহলে আমরা সবাইকে গণহারে না দিয়ে যারা মাস্টার্স করতে পারবে তাদের স্কলারশিপ বা ফেলোশিপের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। কিন্তু সেটা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার মতো রিসোর্স আমাদের নেই।

পরিকল্পনার বাস্তবায়ন যেভাবে হবে?

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিক ক্ষেত্রে স্বাধীন। এখানে ইউজিসি কোনো সিদ্ধান্ত দিয়ে দিতে পারে না, শুধু পরামর্শ দিতে পারে। আমরা সিদ্ধান্ত দেব না, শুধু নীতিগত পরামর্শ দিচ্ছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানতে চাইতে পারে, কতজনকে তারা মাস্টার্সে বা পিএইচডিতে পড়াতে পারবে? তখন বিভাগ তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী প্রস্তাব দিলে অনুষদের ডিন, একাডেমিক কাউন্সিল আছে তারা সিদ্ধান্ত নেবে।

যা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন?

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বহু আগে থেকেই অনার্সকে টার্মিনাল (প্রান্তিক) ডিগ্রি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষক হিসেবে তখন প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম, এটা যদি টার্মিনাল ডিগ্রি হয় তাহলে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোয় মাস্টার্স না চেয়ে অনার্সই চাইত। তাহলেই এটা যে টার্মিনাল ডিগ্রি সেটা প্রমাণিত হবে। আমি অনার্সকে টার্মিনাল ডিগ্রি করে দিয়ে যদি সবার কাছে মাস্টার্স চাই তাহলে এটা টার্মিনাল ডিগ্রি হলো? সরকার যদি নির্দেশনা দেয় আমরাও সেটা মান্য করব অবশ্যই। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রেও সেটা মান্য করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

তবে বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা। সাজ্জাদ হোসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্প্রতি মাস্টার্স শেষ করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে মাস্টার্স ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে সেটা আমার কাছে অনার্সের মতো মনে হয়। অনার্সের মতো সেখানেও ৬-৭ টা কোর্স পড়ানো হচ্ছে। আর সার্টিফিকেট দেওয়া হয় মাস্টার্স ইন অমুক সাবজেক্ট। আসলে একটা সাবজেক্টের নানা কোর্স থাকে, শাখা থাকে। সব বিষয়ে পড়ানো একজনের দ্বারা সম্ভব না। মাস্টার হবে কোনো নির্দিষ্ট কোর্সের বা অংশের ওপরে। যেমন আমাকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে মাস্টার্স ইন এনত্রোপোলজিতে। কিন্তু এটার অনেক শাখা-প্রশাখা আছে, মেডিকেল এনত্রোপোলজি আছে, কালচারাল, আরকিওলজি ইত্যাদি আছে। এতগুলো বিষয়ের ওপর মাস্টার্স এত অল্প সময়ে সম্ভব না। এটা একটা আলাদা কোর্সের ওপরে হওয়া উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থায় যেতে হলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলে যে আবাসন সংকট সেটা থেকেও তারা বেরিয়ে আসতে পারবে। এর বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ হলেও এমনটি হলে তা গবেষণা অঙ্গনে ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে এমনটা প্রত্যাশা তাদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বন্ধ হচ্ছে গণহারে মাস্টার্স করার সুযোগ!

আপডেট সময় : ০৮:১১:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনার্সকে শেষ ডিগ্রি বাস্তবায়ন করে গণহারে মাস্টার্স করার সুযোগ বন্ধ করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন নীতি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। কাগজে-কলমে আগে থেকেই অনার্সই টার্মিনাল ডিগ্রি হলেও এখন থেকে সীমিত করার সুপারিশ তাদের। তবে বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মাস্টার্সে শর্ত জুড়ে দেওয়ার প্রথাও থামানোর দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, স্নাতকই হবে প্রান্তিক ডিগ্রি। এটাই হচ্ছে আমাদের মূল বার্তা। বাংলাদেশে এটা আছে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচার, এমবিবিএস, ভেটেরিনারি বিষয়গুলোতে পাঁচ বছরের স্নাতক ডিগ্রি। অনার্স পাস করে বিসিএসে অংশ নিয়ে মাস্টার্স ছাড়া সিনিয়র সচিবও হতে পারে। কোনো সমস্যা নেই। এরপর যারা উচ্চতর শিক্ষা যেমন এমফিল-পিএইচডি, শিক্ষকতা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যেতে চায় তাদের মাস্টার্সের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে সংখ্যাটা হবে সীমিত।

মাস্টার্স করতে পারা শিক্ষার্থীদের সংখ্যার বিষয়ে তিনি বলেন, একটা বিভাগ কতজন শিক্ষার্থীকে মাস্টার্স করাতে পারবে সেটা নির্ভর করবে সে বিভাগের কতজন অধ্যাপক আছেন, যারা ভালোভাবে গাইড করতে পারবেন তাদের। মাস্টার্সে এবং পিএইচডিতে থিসিস করতে হয়, গবেষণা করতে হয় এটার জন্য গাইড খুব গুরুত্বপূর্ণ।

বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে যারা মাস্টার্স করে তারা স্কলারশিপ বা ফেলোশিপ নিয়ে করে। তাহলে আমরা সবাইকে গণহারে না দিয়ে যারা মাস্টার্স করতে পারবে তাদের স্কলারশিপ বা ফেলোশিপের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। কিন্তু সেটা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার মতো রিসোর্স আমাদের নেই।

পরিকল্পনার বাস্তবায়ন যেভাবে হবে?

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিক ক্ষেত্রে স্বাধীন। এখানে ইউজিসি কোনো সিদ্ধান্ত দিয়ে দিতে পারে না, শুধু পরামর্শ দিতে পারে। আমরা সিদ্ধান্ত দেব না, শুধু নীতিগত পরামর্শ দিচ্ছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানতে চাইতে পারে, কতজনকে তারা মাস্টার্সে বা পিএইচডিতে পড়াতে পারবে? তখন বিভাগ তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী প্রস্তাব দিলে অনুষদের ডিন, একাডেমিক কাউন্সিল আছে তারা সিদ্ধান্ত নেবে।

যা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন?

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বহু আগে থেকেই অনার্সকে টার্মিনাল (প্রান্তিক) ডিগ্রি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষক হিসেবে তখন প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম, এটা যদি টার্মিনাল ডিগ্রি হয় তাহলে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোয় মাস্টার্স না চেয়ে অনার্সই চাইত। তাহলেই এটা যে টার্মিনাল ডিগ্রি সেটা প্রমাণিত হবে। আমি অনার্সকে টার্মিনাল ডিগ্রি করে দিয়ে যদি সবার কাছে মাস্টার্স চাই তাহলে এটা টার্মিনাল ডিগ্রি হলো? সরকার যদি নির্দেশনা দেয় আমরাও সেটা মান্য করব অবশ্যই। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রেও সেটা মান্য করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

তবে বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা। সাজ্জাদ হোসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্প্রতি মাস্টার্স শেষ করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে মাস্টার্স ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে সেটা আমার কাছে অনার্সের মতো মনে হয়। অনার্সের মতো সেখানেও ৬-৭ টা কোর্স পড়ানো হচ্ছে। আর সার্টিফিকেট দেওয়া হয় মাস্টার্স ইন অমুক সাবজেক্ট। আসলে একটা সাবজেক্টের নানা কোর্স থাকে, শাখা থাকে। সব বিষয়ে পড়ানো একজনের দ্বারা সম্ভব না। মাস্টার হবে কোনো নির্দিষ্ট কোর্সের বা অংশের ওপরে। যেমন আমাকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে মাস্টার্স ইন এনত্রোপোলজিতে। কিন্তু এটার অনেক শাখা-প্রশাখা আছে, মেডিকেল এনত্রোপোলজি আছে, কালচারাল, আরকিওলজি ইত্যাদি আছে। এতগুলো বিষয়ের ওপর মাস্টার্স এত অল্প সময়ে সম্ভব না। এটা একটা আলাদা কোর্সের ওপরে হওয়া উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থায় যেতে হলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলে যে আবাসন সংকট সেটা থেকেও তারা বেরিয়ে আসতে পারবে। এর বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ হলেও এমনটি হলে তা গবেষণা অঙ্গনে ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে এমনটা প্রত্যাশা তাদের।