যাপিত জীবনঃ মানসিক চাপ এবং অস্থিরতা নিয়ে টিপস – ডা: এম এ মুনিম সাজু
- আপডেট সময় : ০৭:২৯:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০২০ ৪০২ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের টাইমস ডেস্ক :: কোনো কিছুই ভালো লাগছে না।কেন যেন আজ মনটা কেমন কেমন করছে।বিরক্ত লাগছে,অসহ্য লাগছে সব।আশপাশের কাউকেই সহ্য হচ্ছে না।অস্থিরতা আরো বাড়ছে,প্রচণ্ড রাগও হচ্ছে।মাথাও কাজ করছে না।চিন্তাভাবনা সব গুলিয়ে যাচ্ছে।চেষ্টা করেও এ অবস্থা থেকে বের হতে পারছেন না।
এসবই মানসিক অস্থিরতার লক্ষণ।দৈনন্দিন জীবনে অনেক কারণেই আমাদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।তবে অস্থিরতা যখন স্বাভাবিক মাত্রাকে অতিক্রম করে তখন স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে।আর তা থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি হয়ে পড়ে।মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু প্রয়োজনীয় টিপস।
১. অস্থিরতা দেখা দিলে প্রথমে ব্রিদিং রিলাক্সেশন করুন।নাক দিয়ে আস্তে আস্তে গভীর শ্বাস নিন।বুক ভরে ভেতরের সব খালি জায়গা বাতাসে ভরে ফেলুন।দম অল্পক্ষণ আটকে রাখুন।তারপর মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।এভাবে তিনবার করুন।
২. মনের অস্থিরতা কমাতে ফেলে আসা জীবনের কিছু ভালো স্মৃতি মনে করুন।
৩. উল্টো দিক থেকে সংখ্যা গুনুন। যেমন ১০০, ৯৯, ৯৮ এভাবে।
৪. ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও গান শোনা,গল্পের বই পড়া, কবিতা পড়া,বাগানে সময় কাটানো—এমন ধরনের নিজের ভালোলাগার কাজগুলো করুন।
৫. অনেক সময় যে কারণে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়টি কারো সঙ্গে শেয়ার করলে অস্থিরতা কমে যায়।তাই যাকে আপনি আস্থা মনে করেন তার সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করুন।
৬. অস্থিরতার সময় কোনো একটি চিন্তা বারবার ব্যক্তির মনে আসতে থাকে সে ক্ষেত্রে ঠিক করুন,সারা দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ওই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবেন। আর বাকি সময়গুলোতে নয়।
৭. যদি কোনো ব্যক্তির কারণে অস্থিরতা তৈরি হয়,তবে তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলে বিষয়টা পরিষ্কার করুন।
৮. সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের অভ্যাস করুন,নেশাজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলুন।
৯. প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন, নিয়মিত হাঁটুন।
১০. অস্থিরতার বিষয়টিকে পাত্তা না দেওয়ার চেষ্টা করুন।
১১. অস্থিরতার পেছনে যে কারণগুলো কাজ করে,সব সময় তা দূর করা সম্ভব নাও হতে পারে।তাই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার দক্ষতা অর্জন করে ক্ষতিকর প্রভাবগুলো কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন।
১২. মানসিক অস্থিরতা বোধ করার সাথে সাথে যদি সবার কাছ থেকে নিজেকে আলাদা করে,একা থেকে অস্থিরতার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকেন,তাহলে আপনার মানসিক অস্থিরতা না কমে বরং আরো বাড়বে।তাই এমন অবস্থায় যে পরিস্থিতিতে আছেন তা ত্যাগ করুন।ঘরে থাকলে ঘর থেকে বেরিয়ে বাড়ির অন্যদের সঙ্গে সময় কাটান,অফিসে থাকলে ডেস্ক থেকে উঠে কলিগদের সঙ্গে কথা বলুন।উঠে গিয়ে মুখ-হাতে পানি দিন।
#সমসাময়িক_কারণ_বিবেচনা_করুন
১৩. ভবিষ্যতে কী হবে তা নিয়ে ভেবেও ব্যক্তি অনেক সময় মানসিক অস্থিরতায় ভোগে।তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করুন।
১৪.সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখুন,নিয়মিত প্রার্থনা করুন।
১৫.সাধ সাধ্যের মাঝেই পরিবারের সাথে সময় কাটান,পরিচিত সবাইকে ফোন করে একটু আলাপ করতে পারেন।শিশু এবং বয়স্কদের জন্য আলাদা যত্ন নিতে গেলেই দেখবেন মানসিক চাপ ও অস্থিরতা কমে যাচ্ছে!(এটা গবেষণায় প্রমাণিত)
— সমসাময়িক কারণে ঘরে থাকুন,নিরাপদ থাকুন। শুভ কামনা!