শাল্লা থানার এসআই শাহ আলী’র উপর সশস্ত্র হামলা: ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক অরিন্দম চৌধুরী অপু আটক
- আপডেট সময় : ০৩:০৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১ ৬০ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি: শাল্লা থানার এসআই শাহ আলী’র উপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক অরিন্দম চৌধুরী অপুসহ ৫ জনের উপর মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা সদরে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মামলা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বুধবার পুলিশ সুপার শাল্লায় গিয়ে ঘটনাস্থলের আশপাশের মানুষ ও ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় থানা থেকে নিজের বাসভবনে ফেরার সময় থানার দক্ষিণ পাশের মাঠের কাছাকাছি এলে এসআই শাহ আলী’র উপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন এসআই শাহ আলী। এ ঘটনায় মঙ্গলবার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক অরিন্দম চৌধুরী অপু, স্থানীয় তরুণ বিশ্বজিৎ রায়, পলাশ সরকার পল্টু, মোটর সাইকেল চালক রতন রায় ও চন্দন রায়কে আসামী করে মামলা হয়েছে সোমবার রাতেই অরিন্দম ও রতনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার পর থেকে বুধবার এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৪ টা) শাল্লা উপজেলা সদরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বললেন, এ ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, মঙ্গলবার সকালে ও আমি থানার পাশের দোকানে বসে চা খেয়েছি, আমার স্ত্রী আমাকে বাজারে গিয়ে খুঁজে বের করে বললো, ‘তুমি এখানে বসে চা খাচ্ছ, তোমাকে খুঁজতে বাড়ি গিয়ে ঘেরাও করেছে পুলিশ’। তিনি বলেন, ঘটনা হয়েছে কি-না সেটাও তিনি জানেন না, হয়ে থাকলে যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বাড়ি বাড়ি পুলিশ গেলে জন সাধারণ আতঙ্কে থাকা স্বাভাবিক।
উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক পলাশ চৌধুরী বললেন, ঘটনার পর আমাদের বাড়িতেও পুলিশ এসেছিল। আমার জেঠাতো ভাই বিশ^জিৎ চৌধুরী নান্টুকে খুঁজেছে। আরেক জেঠাতো ভাই চয়ন চৌধুরী’র ঘরে ঢুকে আসামী খুঁজেছে। যারা আসামী তাদের বাড়ি ঘুঙ্গিয়ারগাঁওয়ে কিন্তু আমাদের ডুমরাসহ অন্য গ্রামেও আতঙ্ক আছে। ঘটনার পর এখন পর্যন্ত (বুধবার বিকাল ৪ টা) আমি নিজেও উপজেলা সদরে যাই নি। ভয়ে আছে অনেকেই। শাল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি পিসি দাস বললেন, দুই দিন ধরে উপজেলা সদরে লোকজনের উপস্থিতি কমে গেছে। বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ঘটনা হয়ে থাকলে সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া যেতে পারে। নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেটি খেয়াল রাখতে হবে।
অভিযুক্ত অরিন্দম চৌধুরী অপু’র স্ত্রী ইরা সরকার বললেন, রাত সাড়ে ১২ টায় শুনেছি ঘটনার কথা বলা হচ্ছে। অথচ আমার স্বামী ১১ টা থেকে বাড়িতে ছিলেন। আমার স্বামীকে পুলিশ বাড়ি থেকে এসে নিয়ে গেছে। এমন ঘটনা ঘটিয়ে কেউ বাড়িতে থাকবে না কি, এই বিষয়টি দায়িত্বশীলরা বুঝতে হবে। শাল্লা থানার ওসি নূর আলম বললেন, এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তাকে খুন করার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধে মামলা হয়েছে। মামলায় ৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। ২ জন গ্রেপ্তার আছে।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বুধবার সকাল থেকে শাল্লায় সরেজমিনে গিয়ে এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। পুলিশ সুপার এ প্রতিবেদককে বললেন, তিনি আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জেনেছেন, রাতে ধাক্কাধাক্কি হবার পর তারা এসে কয়েকজনকে দৌড়ে যেতে দেখেছেন। হাসপাতালের ডাক্তার তাকে জানিয়েছেন, এস আই শাহ আলী’র পায়ের নোকে ও কপালে আঘাত ছাড়াও শরীরে একটি লাটির বাড়ি আছে।
দিরাই-শাল্লার সংসদ সদস্য ড. জয়া সেন গুপ্তা বললেন, আমাকে বলা হয়েছে পুলিশ অফিসারের গায়ে হাত তুলা হয়েছে। আবার অভিযুক্তদের পক্ষে বলা হয়েছে ঘটনা সাজানো। গায়ে হাত তুলার বিষয়টি সত্যি হলে, এটি দু:খজনক হবে।