সিসিকের পরিধি বৃদ্ধি নিয়ে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন চলছে বাড়ছে অসন্তোষ
- আপডেট সময় : ০৮:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮১ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)-এর পরিধি বাড়ানোর জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। এই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। অনেক এলাকা সিটি করপোরেশনের অর্ন্তভূক্ত হওয়ার দাবি জানিয়েছে। আবার কিছু এলাকা সিটি করপোরেশনের বাইরে থাকতে আন্দোলনে নেমেছে। এসব দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন কিংবা স্মারকলিপি প্রদানের ঘটনা ঘটছে।
, গত ৯ আগস্ট সিসিক সম্প্রসারণের উদ্যোগের অংশ হিসেবে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে সিলেট জেলা প্রশাসন। সিলেট সিটি করপোরেশনকে প্রায় ৫৭ বর্গকিলোমিটারে উন্নিতের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বর্তমানে সিসিকের আয়তন রয়েছে ২৬ বর্গকিলোমিটার।
তবে গত ১৯ আগস্ট সিলেট সিটি করপোরেশনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ ড. একে আব্দুল মোমেনও বলেন, সিলেট নগরের আয়তন আট গুণ বাড়ানো উচিত। বর্তমান গণবিজ্ঞপ্তিকে বিপর্যয়কর বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে সিটি করপোরেশনের আয়তন মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী বর্ধিত না হওয়ার কথা জানিয়েছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও। গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছিলেন, গেজেটেড মাস্টারপ্ল্যানে সিসিককে সম্প্রসারণ করে ৮৫.১৫ বর্গকিলোমিটারে উন্নিত করার নির্দেশনা রয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই নগরের আশপাশের অনেক এলাকায় ক্ষোভ দেখা দেয়। দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ও সদরের কয়েকটি ইউনিয়ন সিটির আওতায় আসতে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। আবার সদর উপজেলার খাদিম নগর ইউনিয়নসহ কিছু কিছু এলাকা সিসিকের আওতার বাইরে থাকতে বিক্ষোভ করছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে সদর উপজেলার ৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অর্ন্তভূক্তের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। তবে এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের অনেকে সিটির অর্ন্তভূক্ত না হতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই বিক্ষোভ করে আসছেন। শনিবারও (৫ আগস্ট) তারা একই দাবিতে খাদিমপাড়ায় মানববন্ধন করেন।
একই দিনে সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়নের টুকেরগাঁও, গৌরিপুর ও নোয়াগাঁওকে সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এলাকাবাসী।
প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়নের কিছু এলাকাকে সিটি করপোরেশনের আওতাভূক্ত করা হয়েছে। বাদ পড়ে গেছে ইউনিয়নের ৬টি মৌজা। এই ৬ মৌজাকেও সিসিকের অর্ন্তভূক্ত করার দাবিতে গত ৩০ আগস্ট জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এসব এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার সাথে কথা বলে জানা যায়, গণবিজ্ঞপ্তিতে ইউনিয়ন বিভক্ত করা হয়েছে। তাদের মতে, একটি ইউনিয়নের অর্ধেক বা কিছু অংশ সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করলে স্থানীয়দের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। পাশাপাশি থাকার পরও সিটি ও ইউনিয়নের সেবা আলাদা হওয়ায় অনেকেই বৈষম্যের শিকার হবেন। তাই কোনো ইউনিয়নকে আংশিকভাবে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত না করে পুরো ইউনিয়নকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তারা।
গত ৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়নের ৬টি মৌজা সিলেট সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্তির দাবীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সিলেট সিটি মেয়র, ও সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কুচাই ইউনিয়নের পালপুর, কুচাই, পশ্চিমভাগ, শ্রীরামপুর, সুলতানপুর ও তৈয়বসুলতান মৌজাকে বাদ দিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের সীমানা বৃদ্ধির খসড়া গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা চাই পালপুর, কুচাই, পশ্চিমভাগ, শ্রীরামপুর,সুলতানপুর ও তৈয়বসুলতান মৌজাকেও সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করা হোক।