মহিলা প্রতারক ঝুমার খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন নিরীহ রেলকর্মচারী আলমগীর
- আপডেট সময় : ০২:২৬:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অক্টোবর ২০২১ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের টাইমস ডেস্ক :: চিহ্নিত মহিলা প্রতারক ঝুমা আক্তারের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছেন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরত নিরীহ রেলকর্মচারি আলমগীর হোসেন। এ ব্যাপারে প্রতারকের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমায় দু’টি জিডি এন্ট্রি এবং সর্বশেষ ১টি অভিযোগ পেশ করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার বুড়িচং থানার আদি বাসিন্দা বর্তমান সিলেটের জৈন্তাপুর গোয়াবাড়িতে বসতি স্থাপনকারী সুলতান মিয়ার পুত্র আলমগীর হোসেন (৩৯) সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ট্রাফিক বিভাগে চাকুরিরত। তার স্ত্রী সীমু বেগম (৩৫) দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ বিধায় পারিবারিক কাজকর্মে চরম ব্যাঘাত ঘটছিল। এ অবস্থায় গত আগস্ট মাসের প্রথমদিকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরত অবস্থায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট কোনারচরা গ্রামের তাজুল ইসলামের মেয়ে ঝুমা আক্তার (২২) রেলকর্মচারি আলমগীরের কাছে এসে একটু আশ্রয় চায়। প্রতারক ঝুমা আক্তারের চাতুরীপূর্ণ কথাবার্তায় আকৃষ্ট হয়ে আলমগীর সরল বিশ্বাসে বাসায় গৃহকর্মীর শর্তে ঝুমাকে আশ্রয় দেন। বাসায় গিয়ে ঝুমা নানা কুটকৌশলে আলমগীরের স্ত্রীকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করলে সীমু নিজের শারীরিক অক্ষমতা বিবেচনায় ঝুমাকে শরীয়তসম্মতভাবে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার জন্য স্বামীকে অনুরোধ জানান। ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও শুধুমাত্র স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে আলমগীর নিকাহ্ আইন ও ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী ঝুমাকে বিয়ে করে স্ত্রী’র মর্যাদা দেন। বিয়ের ২/৩ দিন পরেই ঝুমা স্বরূপে আভির্ভূত হয়। সে আশ্রয়দাত্রী সীমুর সাথে দূর্ব্যবহার শুরু করে এবং এর জের ধরে তাকে অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে রাখার জন্য আলমগীরকে জবরদস্তি করতে থাকে। পারিবারিক অশান্তি এড়াতে বাধ্য হয়েই গৃহকর্তা ঝুমাকে অন্য বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় স্ত্রী যাতে স্বচ্ছন্দে থাকে, সে লক্ষ্যে তিনি ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের কানের দুল ও আংটিসহ ৫ ভরি ওজনের রূপার অলংকার কিনে দেন।
কিন্তু পৃথক বাসায় গিয়ে গৃহকর্তার অনুপস্থিতিতে সুযোগ বুঝে প্রতারক ঝুমা গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে বাসার ওয়ার্ডরোবের তালা ভেঙ্গে স্বর্ণ ও রূপ্যের অলংকার, নগদ ৭০ হাজার টাকা এবং মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আলমগীর হোসেন দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করেন (জিডি নং-১০৯২/২১, তারিখঃ ২৩/০৯/২১)। ঘটনার ৪ দিন পর বড় বোনকে সাথে নিয়ে প্রতারক ঝুমা পুনরায় বাসায় এসে ভবিষ্যতে এ ধরণের অপকর্ম আর করবে না মর্মে ন্বীকারোক্তি দিয়ে স্বামী আলমগীরের কাছে ক্ষমা চাইলে গৃহকর্তা মানবিক কারণে দক্ষিণ সুরমা থানায় অপর একটি জিডি’র (জিডি নং-১২১৩/২১, তারিখঃ ২৬/০৯/২১) মাধ্যমে পূর্বোক্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে পুনরায় তাকে বাসায় স্থান দেন। কিন্তু চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী।
এরপর সপ্তাহখানেক সময় ভাল কাটলেও পুনরায় গত ৪ অক্টোবর বিকেলে গৃহকর্তার অনুপস্থিতির সুযোগে প্রতারক ঝুমা আক্তার নগদ ১৯ হাজার ৫ শ’ টাকাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আবারও পালিয়ে যায়। বাসায় এসে ঘর তালাবদ্ধ দেখে গৃহকর্তা ঝুমার ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল নাম্বারে কল দিলে প্রথমে সে রিসিভ করেনি। ৩/৪ দিন পরে কল রিসিভ করলেও হাতিয়ে নেয়া নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে। রাগের মাথায় আলমগীর প্রতারক স্ত্রী ঝুমাকে তালাক দেয়ার কথা বললে, ঝুমা নগদ ২৫ হাজার টাকা দিলে মুল্যবান কাগজপত্র ফেরত এবং তালাক গ্রহণে কাজীর সামনে আসলে বলে জানায়। অন্যথায় যত্র-তত্র অপকর্ম করে আলমগীরের পরিচয় দেবে বলে হুমকী দেয়। অনেক বুঝিয়েও কোন ফলোদয় না হওয়ায় স্বামী আলমগীর বাধ্য হয়ে গত ২৩ অক্টোবর দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ তদন্ত করছে বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে।