সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধ সম্ভব
- আপডেট সময় : ০১:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৮০ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস একটি সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক দিন। ২০০৩ সাল থেকে ১০ই সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা প্রতিরোধের দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এ দিবস পালিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করো’।
দীর্ঘদিন ধরেই তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতায় ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর কাজ করে আসছে। বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের অর্কিড সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনের বিষয় “আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা, মাদকনির্ভরশীল ব্যাক্তি এবং আত্মহত্যার উচ্চ ঝুঁকি”।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাউন্সিলর মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস মজুমদার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার পাশাপাশি বর্তমান সমাজের আলোচিত বিষয় আত্মহত্যা প্রতিরোধেও কাজ করে যাচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ২০২১ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে আসা সেবাগ্রহণকারী নারীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ করেছে। ২০২১ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত সেবাগ্রহণকারী নারীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৩২২ জন সেবাগ্রহণকারী নারীদের মধ্যে ১৭৭ জনের আত্মহত্যার ভাবনা ছিল। ৯৮ জন কখনো না কখনোও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে এবং ৫ জন চিকিৎসা নেয়ার পরও শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার মাধ্যমে তাদের জীবনের পরিসমাপ্তি টেনেছে। ১৭৭ জন আত্মহত্যাপ্রবণ রোগীদের মধ্যে ১২২ জন মাদকাসক্ত ছিলো। তাদের মধ্যে ১৬৩ জনের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে এবং ৭৪ জন আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যাক্তির কমপক্ষে ১ টি মানসিক রোগ ছিলো।
সংবাদ সম্মেলনের মুল আলোচক কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের মনোচিকিৎসক বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ রাহেনুল ইসলাম আত্মহত্যা কারনগুলোর মধ্যে মাদকাসক্তি, ডিসফাংশনাল ফ্যামিলি এবং মোবাইল আসক্তির উপর খুব গুরত্ব দিয়েছেন। তার মতে আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রথম পদক্ষেপ পরিবার থেকে শুরু করতে হবে, পরিবারের সদস্যদের মোট প্রকাশের অধিকার, একে অন্যের প্রতি সম্মান এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি খুব গুরত্বপূর্ন। শিশুরাও যে আত্মহত্যার ঝুঁকির বাহিরে নয় এই তথ্যটিও তিনি উপস্থাপন করেছেন।
প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সাইক্লোজিস্ট রাখী গাঙ্গুলী তার বক্তব্যে বলেন, আত্মহত্যা কখনোই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, এর জন্য পূর্ব ঘটিত অনেক কারন জড়িত। সমাজিক মাধ্যম গুলোকে এ বিষয়ে ব্যপক প্রচারনার মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য এবং ওয়শ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধ একটি জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার এবং আত্মহত্যার মৃত্যুর হার কমানো নিশ্চিত করার জন্য জরুরী পদক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি আরোও বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে আহ্ছানিয়া মিশনের মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি উৎযাপন করছে।