ছাতকের চেচানে গরুর ফার্মের বর্জ্যে দুষিত জনস্বাস্থ্যকর পরিবেশ
- আপডেট সময় : ০৫:৪৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩ ৯৪ বার পড়া হয়েছে
ছাতক উপজেলার চেচান বাজারের শাহবাড়ি বাউর গ্রামে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দুষণ করে ৫০টি দেশি-বিদেশী গরু নিয়ে গরুর ফার্ম প্রতিষ্ঠা করার ফলে গরুর বর্জ্যরে দুর্গন্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিগত ৩ বছর ধরে একই অবস্থা বিরাজ করছে শাহবাড়ি বাউর গ্রামে। এ কারণে সেখানে অর্ধশতাধিক মানুষ গরুর বর্জ্যরে পচা দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়েছেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি-২০২৩ ভুক্তভোগীরা পৃথক পৃথক ভাবে জলবায়ু ও পরিবেশন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবরে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আবেদন জানান। যার ডকেট নং- ১১৬১। কিন্তু অদ্যাবধি পর্যন্ত ভুক্তভোগীরা কোন প্রতিকার পাননি। এর আগে গত ২৭/০৭/২২ইং তারিখে ভুক্তভোগীরা আবেদন জানান।
ছাতক উপজেলার চেচান এলাকার শাহবাড়ি বাউর গ্রামের মৃত শাহ সোয়াইব আলমের ছেলে শাহ বদরুল আলম বলেন,একই এলাকার মৃত শাহ রহিম আলমের ছেলে শাহ শফিকুল আলম জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে প্রথমে ৪/৫টি গরু নিয়ে নামমাত্র মেসার্স নাফিসা ডেইরী ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। পর্যায়ক্রমে এ পর্যন্ত অভিযুক্ত শফিকুল আলম মোট ৫০টি দেশী-বিদেশী গরু নিয়ে ফার্ম পরিচালনা করার ফলে আশপাশের জনস্বাস্থ্য হুমকীর সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এতে অর্ধ শতাধিক মানুষ গরুর দুষিত বর্জ্যরে দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। বমি, এলার্জি, তাপ, সর্দি, জ্বর, ডাইরিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই।
গত বছরের ২০ অক্টোবর পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন করার আগে জানতে পেরে মেসার্স নাফিসা ডেইরী ফার্মের মালিক শফিকুল আলম তার ফার্ম থেকে গোপনে অনেক গরু সরিয়ে ফেলে। এজন্য ফার্মের বিরুদ্ধে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর আইনগত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়।
শফিকুল আলম মিথ্যা অজুহাত তুলে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটকে জানিয়েছেন ৪/৫টি গরু নিয়ে ফার্ম করে ফার্ম থেকে গরুর মল-মূত্র দিয়ে বায়ু গ্যাস তৈরি করেন। কিন্তু বিপরীতে প্রায় ৫০টি গরু নিয়ে ফার্ম পরিচালনা করায় গরুর ফার্মের মল-মূত্র পার্শ্ববর্তী আশাপাশ বাড়ির ছড়া-নালায় ফেলে দেয়ায় প্রতিদিন চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে।
সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর এই অস্বাস্থ্যকর ও দুষণযুক্ত পরিবেশের বিরুদ্ধে সময়মত আইনী ব্যবস্থা নেয়নি।
আবেদনকারীর পক্ষে শাহ বদরুল আলম সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরে কয়েক মাস আগে একই ধরনের অভিযোগ দেন। এই অভিযোগটি পরিবেশ অধিদপ্তর গায়েব করে ফেলে বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি অভিযোগ নিয়ে গেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে তাড়িয়ে দেন।
অভিযুক্ত গরুর ফার্ম থেকে আশাপাশের বাড়ির ঘন দূরত্ব ১২ ফুট হতে ১৫ ফুট পর্যন্ত। স্বাস্থ্য ঝুঁকি, পরিবেশ দূষণ এবং ঘনবসতির বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে এই গরুর ফার্ম প্রতিষ্ঠা করায় এলাকাবাসী সব সময় প্রতিবাদ করে যাচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় চেচানের শাহবাড়ি বাউর গ্রামের অর্ধ শতাধিক মানুষ মেসার্স নাফিসা ডেইরী ফার্ম এর বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দেন।