সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন কাল
- আপডেট সময় : ০৪:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২১ ৮০ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ সংবাদদাতাঃ পরিবহন সেক্টরের শীর্ষ সংগঠন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদ্য পরিবর্তিত রূপে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (১৪১৮)-এর কার্যকরী পরিষদের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন আগামীকাল ১ ফেব্রয়ারি সোমবার। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী মোঃ শাহাজাহান খান ফেডারেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমদ খানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রবীণ শ্রমিক নেতা ও ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম হাফিজ লোহিত, শ্রমিক নেতা নুর মিয়া, আব্দুল মতিন চৌধুরী ও শাহ ফখরুল ইসলাম রুবেলকে নির্বাচন কমিশনার মনোনীত করে ইতিপূর্বে গঠিত ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন ইউনিয়নের নির্বাচনী সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে। নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতার জন্য কেন্দ্রীয় শ্রমিক ফেডারেশনের অন্যতম নেতা সজিব আলীকে আহবায়ক, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক মালিক গ্রæপের সভাপতি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোলাম হাদী ছয়ফুল, সিলেট ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি আবু সরকার, সিলেট জেলা অটোরিক্সা (সিএনজি) শ্রমিক ইউনিয়ন (৭০৭)-এর সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আজাদ মিয়াকে সদস্য করে একটি শক্তিশালী উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়েছে।
শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস সেক্রেটারি মোঃ আলী আছকর সেলিম নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটগ্রহণের জন্য এসএমপি’র মোগলাবাজার থানাধীন পারাইরচকস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে ১২টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ইউনিয়নের তালিকাভ‚ক্ত ৯ হাজার ৬৭৪ জন ভোটারের প্রত্যেকে ১৫টি করে ভোট প্রদানের তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচন কমিশন ভোট প্রদানকালে প্রত্যেক ভোটারকে নিজ নিজ পরিচয়পত্র সাথে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী পরিচয়পত্র ছাড়া ভোটাধিকার প্রয়োগ করা যাবে না। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সকল ভোটারকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক মুখে মাস্ক ব্যবহার করে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের অনুরোধ জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিগত সময়ের নির্বাচনকালে বিভিন্ন টার্মিনাল ও স্ট্যান্ডে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করে ভোট গ্রহণ করা হতো। এতে করে নানা জটিলতা দেখা দিতো। তাই সার্বিক বিবেচনায় এবার সকল ভোটারকে একটি পয়েন্টে নিয়ে এসে কয়েকটি পোলিং বুথের মাধ্যমে ভোট প্রদানের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই ১জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২০০জন পোলিং অফিসার এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছেন। পাশাপাশি আইন-শৃংখলার রক্ষা ও নাশকতা এড়াতে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকবেন বলে নির্বাচন কমিশন সুত্র জানিয়েছে। একই সাথে সিনিয়র একজন পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল টিমও কাজ করবে। নির্বাচন কমিশন সুত্র জানিয়েছে, একটানা ভোট গ্রহণের পর ভোটকেন্দ্রেই প্রিজাইডিং অফিসারের নেতৃত্বে ভোট গণনা করা হবে। আজ রোববার রাতের মধ্যেই ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নগরির পুরাতন স্টেশন রোডস্থ ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয় থেকে পারাইরচকস্থ ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। প্রতিটি পোলিং বুথের ভোট গণনা শেষে নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচারণা চালান। তবে রাত ১২টার পর থেকে তারা সকল প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছেন। শেষদিন হিসেবে শনিবার পুরোদিনই প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। ইতিপূর্বে পোস্টারিং, মিছিল-মিটিং ইত্যাদিতে ব্যস্ত থাকলেও শেষদিনে এসবের পাশাপাশি তারা মূলতঃ গণসংযোগের দিকে সময় ব্যয় করেন বেশী। নির্বাচন কমিশন সুত্র জানিয়েছে, সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ১৫টি পদে নির্বাচন হচ্ছে। সভাপতি পদে হাজী ময়নুল ইসলামের প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন সাবেক সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক। এছাড়া কার্যকরী সভাপতির ১টি পদে প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন বর্তমান কার্যকরী সহ-সভাপতি রুনু মিয়া, আব্দুন নূর, সাহেব আলী। সহ-সভাপতির ১টি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন তৈয়ব আলী খান, জসিম উদ্দিন, কাপ্তান মিয়া, মানিক মিয়া, মোঃ সুমন ও আবিদ আহমদ। সাধারণ সম্পাদকের ১টি পদে মুখোমুখি হয়েছেন শাহ জামাল আহমদ, আব্দুল মুহিম, রেজাউল করিম ও আইয়ুবুর রহমান। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের ১টি পদে নির্বাচন করছেন আলী আকবর রাজন, নুর আহমদ ও আব্দুস সালাম। সহ-সাধারণ সম্পাদকের ১টি পদে প্রার্থী হয়েছেন রফিকুল ইসলাম লিটন, মাহবুব মিয়া, সুরমান আহমদ, সুহেল আহমদ, অশোক কুমার দেব ও মনির উদ্দিন। সাংগঠনিক সম্পাদকের ১টি পদে আবুল হাছনাত, নজরুল ইসলাম ও আলী হোসেন মুখোমুখি হয়েছেন। প্রচার সম্পাদকের ১টি পদে প্রার্থী হয়েছেন দুলাল আহমদ, আয়নাল উদ্দিন, হারিছ আলী ও হাফিজুর রহমান হাবিব। কোষাধ্যক্ষের গুরুত্বপুর্ণ ১টি পদে আব্দুর রহিম, আব্দুস সহিদ ও সামছুল হক মানিক প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। নির্বাহী সদস্যের ৬টি পদে প্রার্থীতা করছেন ২৫ প্রার্থী। এরা হচ্ছেন আব্বাস আলী, ছালিক মিয়া, ফরিদ মিয়া, তৈয়বুর রহমান, আব্দুস সালাম, বেলাল উদ্দিন, মনজুর আহমদ, নুরুল ইসলাম খান, আলাউদ্দিন, শেখ আজিজ আহমদ, সোয়েব আহমদ, জয়নাল উদ্দিন, আতিক মিয়া, বেলাল আহমদ, রিপন শাহ, শাহাব উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, মকবুল হোসেন বাদল, সাহেদ আহমদ, গোপাল চন্দ্র দে, শামীম আহমদ, নূরউদ্দিন লিটন, সাইফুল ইসলাম, গৌছ আলী ও আবুল কালাম আজাদ।
উল্লেখ্য, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের জন্য গত ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়। ১৫ জানুয়ারি ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয় ১৬ জানুয়ারি। এদিকে, আগামীকালের নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য নির্বাচন কমিশন ইউনিয়নের সর্বস্তরের শ্রমিকদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ঐতিহ্য ও সুনাম রক্ষার স্বার্থে সকল প্রকারের বিশৃংখলা এড়াতে ভোটারদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।